সুদ ও শোষণের কোটি কোটি টাকার উপর প্রতিষ্ঠিত এন.জি.ও-দের সুদি
ব্যাংকগুলোর মোকাবেলায় সুদমুক্ত নিঃস্বার্থ
ঋণদান প্রকল্প গ্রহণ করলেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে
দাঁড়ায় সুদ ও শোষণ ব্যতীত বৈধ উপায়ে মোটা অংকের টাকার ব্যবস্থাপনা করা। এত
বিশাল অংকের টাকার ব্যবস্থাপনা এককভাবে যেমন সম্ভব নয় তেমনই স্বল্প মেয়াদেও যোগাড় করা অসম্ভব। মূলত এই
চিন্তাকে সামনে রেখেই ঋণদান প্রকল্পের স্থায়ী
ও সুষ্ঠু বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যেই সর্বাগ্রে গ্রহণ করা হয়েছে একটি সঞ্চয়ী প্রকল্প। সদস্যদের একটু একটু করে সঞ্চয় করা টাকার
বৃহৎ অংক নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পরে শুরু হবে
মূল কার্যক্রম ঋণদান প্রকল্প। একারণেই এই মহান
ব্রতকে শতভাগ সফল করার লক্ষ্যে সঞ্চয়ী প্রকল্পের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে সুনির্দিষ্ট একটি কর্মপদ্ধতি ও শক্ত বলয়ের একটি অবকাঠামো।
মায়ের উদর ছেড়ে কোন মানব সন্তান যখন নেমে আসে সবুজ পৃথিবীর বুকে তখন মানুষ সর্বপ্রথম ভাবে তার সুন্দর একটি নামের কথা; ঠিক তেমনই সুদমুক্ত ঋণদান প্রকল্পের সহায়ক মাধ্যম সঞ্চয়ী প্রকল্পের ধারণাটা যখন কিছু তরুণের মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরা বেয়ে নেমে এল বাস্তব জগতে তখনই ভাবনা এল এর সুন্দর একটি নাম প্রয়োজন। যে নামে থাকবে খাঁটি বাংলার ঘ্রাণ যা হবে ঘাত-প্রতিঘাতের বহু ঊর্ধ্বে। তাই ভেবে চিন্তে সঞ্চয়ী প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে মাইমূন সমিতি (ميمون- সৌভাগ্যবান)।”
সঞ্চয়ী প্রকল্পের স্বঘোষিত কার্যক্রম শুরু হবে ১লা জানুয়ারী ২০১২ ঝ. এবং দলবদ্ধ আবশ্যকীয় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৯ ঈ. পর্যন্ত। অনুর্ধ্ব ১০ জনের সদস্য বলয়ে মোট দশ বছর পর্যন্ত চলবে সঞ্চয়ী কার্যক্রম। মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা ও এককালীন ৬০০০ টাকাসহ বৎসরে সদস্যপ্রতি মোট ৬০০০ টাকা জমা হবে সমিতির “সঞ্চয়ী ফান্ডে”। দীর্ঘ দশ বছর মেয়াদ কালে সমিতির যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে সদস্যদের মাসিক চাঁদা এবং বৎসরের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে প্রয়োজনে সদস্যদের থেকে নেয়া চাঁদা ও লভ্যাংশের ১০% এর মাধ্যমে গঠিত হবে “রিজার্ভ ফান্ড”। বছর দুয়েক অতিক্রান্ত হলে সঞ্চয়ের কলেবর যখন কিছুটা বৃহৎ আকার লাভ করবে তখন পুঁজিগুলোকে নিস্ক্রিয় করে না রেখে লাভজনক কোন বিনিয়োগ খাতে ইনভেস্ট করা হবে। আর বিনিয়োগ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগ অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে বিনিয়োগের অর্থসংরক্ষণ ও হিসাব-নিকাশের জন্য গঠন করা হবে “বিনিয়োগ ফান্ড”। বিনিয়োগ থেকে আসা লাভের টাকা সংরক্ষণ ও হিসাব-নিকাশের জন্য গঠন করা হবে একটি “লভ্যাংশ ফান্ড”। দীর্ঘ দশ বছরে সঞ্চয়ী ফান্ড, রিজার্ভ ফান্ড, বিনিয়োগ ফান্ড ও লভ্যাংশ ফান্ড মোট চারটি ফান্ডের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সুন্দর পরিচালনার জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ সদস্যদেরকে নিয়ে গঠন করা হবে একটি “পরিচালনা কমিটি”। এই পাঁচটি ডিপার্টমেন্ট নিয়ে সঞ্চয়ী প্রকল্পটি যখন পঞ্চম বছরে পদার্পণ করবে তখন সমিতির সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে শুরু হবে মূল কার্যক্রম-“ঋণদান প্রকল্প”।
সুতরাং “সমবায় সমিতির” পাঁচটি ডিপার্টমেন্টের অবকাঠামো ও দায়-দায়িত্ব হবে নিম্নরূপ-
পরিচালনা কমিটি
১. সভাপতি
২. সহ-সভাপতি
৩. সাধারণ সম্পাদক
৪. সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদক
৫. সঞ্চয়ী ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক
৬. রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
৭. রিজাভ ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক
৮. বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
৯. বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
১০. লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
দায়-দায়িত্ব
১. সভাপতি
‘মাইমূন সমিতির’ সভাপতি মূলত সংগঠনের মহা-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে থাকবেন। সমিতির সার্বিক পরিচালনার দায়িত্ব তার উপর। সমিতির প্রতিটি বিষয়ে তিনি সার্বক্ষণিক নজরদারি করবেন এবং সকল সদস্য ও দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগসহ পরামর্শ, মতামত ও সিদ্ধান্ত আদান-প্রদান করবেন। প্রত্যেক বিভাগের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি কাজ সম্পর্কে সংবাদ তার জানা থাকবে। প্রয়োজনে নতুন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করার অধিকার থাকবে। তবে তা অবশ্যই সদস্যদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে। সমিতির সার্বিক ক্ষমতা তার হাতে থাকবে। সর্বক্ষেত্রে তার রায় চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। তবে সমিতির মূলনীতির পরিপন্থী না হতে হবে এবং একচেটিয়া মনোভাব না থাকতে হবে।
সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হবে সদস্যদের সর্ব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে। তার মেয়াদ সর্বোচ্চ দশ বছর। তিনি কোন পদে রদ-বদল করতে চাইলে তা সদস্যদের সর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করতে হবে। সভাপতির মাঝে সমিতির সংবিধানে প্রণীত মূলনীতি পরিপন্থী ও ক্ষতিকারক কোন কিছু পরিলক্ষিত হলে কিংবা দায়-দায়িত্বের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখা দিলে সকল সদস্যের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত মেয়াদের পূর্বেই তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হবে এবং নতুন সভাপতি নিয়োগ দেয়া হবে।
সমিতির কোন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সভাপতির মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর অপরিহার্য বলে গণ্য হবে।
২। সহ-সভাপতি
সমিতির সহ-সভাপতি মূলত সংগঠনের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে থাকবেন। সভাপতির ধারায় উল্লেখিত সকল দায়-দায়িত্বের ক্ষেত্রে তিনি সভাপতির সহকারী বিবেচিত হবেন। সভাপতির অনুপস্থিতিতে তার সকল কাজ সহ-সভাপতি আঞ্জাম দিবেন।
সভাপতির অনুপস্থিতিতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সহ-সভাপতির মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর গ্রহণযোগ্য হবে।
৩। সাধারণ সম্পাদক ঃ
সমিতির সাধারণ সম্পাদক মূলত সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করে থাকবেন। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো কোন মিটিংয়ের প্রয়োজন হলে সভাপতির সাথে আলোচনা করে মিটিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করে মিটিংয়ের আহ্বান করা এবং মিটিং পরিচালনা করা। বিভিন্ন প্রয়োজনে সদস্যদেরকে আহ্বান যোগাযোগ ইত্যাদি করবেন।
সকল মিটিং ও পদক্ষেপ গ্রহণের সময় তার মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৪। সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদক
সমিতির সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব খুব স্পর্শকাতর এবং কিছুটা জটিল। এর জন্য প্রয়োজন পরিপূর্ণ আমানতদার ও দক্ষ হিসাবি লোক। সমিতির সঞ্চয়ী টাকার দায়-দায়িত্ব ও সংরক্ষণের ভার অর্থ সম্পাদকের উপর ন্যাস্ত করা হবে না। বরং কোন ব্যাংকে “চলতি হিসাব” (ঈঁৎৎবহঃ অ/ঈ) একাউন্ট খুলে টাকা সংরক্ষিত রাখা হবে। এক্ষেত্রে তার দায়িত্ব হবে তিনি প্রতি মাসে ১-১০ তারিখের মধ্যে সকল সদস্যের মাসিক কিস্তি আদায় করে ব্যাংকে জমা রাখবেন। আর দূরের সদস্যদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট একাউন্টে টাকা জমা দেয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়ে নিবেন, এবং প্রতি মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে যে কোন দিন ব্যাংকে যোগাযোগ করে মোট টাকার হিসাব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আসবেন। প্রতি মাসে একাউন্টে মোট কত টাকা জমা হচ্ছে এবং কে কতো তারিখে টাকা জমা দিচ্ছে ও সদস্য প্রতি কতো টাকা জমা হয়েছে তার বিস্তারিত হিসাব খাতায় সুস্পষ্টভাবে লিখে রাখবেন। সমিতির বিনিয়োগ শুরু হলে সঞ্চয়ী ফান্ড থেকে কতো টাকা বিনিয়োগের জন্য নেয়া হচ্ছে, কতো টাকা বিনিয়োগ থেকে ফিরে আসছে তারিখসহ তার বিস্তারিত হিসাব খাতায় লিখে রাখবেন। সাথে সাথে অর্থ গ্রহণকারী ও ফেরৎ দানকারীর স্বাক্ষর নিবেন। বিনিয়োগে কোন লাভ আসলে লভ্যাংশের টাকা সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদক তা গ্রহণ করবেন না। বরং তা লভ্যাংশ ফান্ডে জমা হবে। সঞ্চয়ী ফান্ড শুধুমাত্র বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরৎ নিবে। (আল্লাহ না করুন) বিনিয়োগে কোন লোকসান হলে অবশিষ্ট টাকা জমা নিবেন ও লোকসানের পরিমাণ তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন।যে কোন সদস্য যে কোন সময় সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছে সঞ্চয়ী ফান্ডের হিসাব চাওয়ার অধিকার রাখেন এবং অর্থ সম্পাদক ফান্ডের হিসাব দেখাতে বাধ্য থাকবেন।
সঞ্চয়ী ফান্ড থেকে টাকা উত্তোলন ফেরৎসহ এই ফান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৫। সঞ্চয়ী ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক ঃ
সঞ্চয়ী ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক মূলত সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের ধারায় উল্লেখিত সকল বিষয়ে সহকারী ও সহযোগী হিসাবে বিবেচিত হবেন। সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তার সকল কাজ আঞ্জাম দিবেন।
অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর গ্রহণযোগ্য হবে।
৬। রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
রিজার্ভ ফান্ডের দায়-দায়িত্ব একটু বেশি, তবে, তেমন কঠিন নয়। রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের প্রধান কাজ হলো সমিতির আভ্যন্তরীণ সকল ব্যয়ভার বহন করা। রিজার্ভ ফান্ডের আয়ের উৎস হলো দুটি।
১। সদস্যদের থেকে নেয়া মাসিক দশ টাকা ও প্রয়োজনে অন্তর্বর্তিকালীন চাঁদা ।
২। লভ্যাংশের ১০%।
প্রাথমিক অবস্থায় সদস্যদের থেকে নেয়া মাসিক চাঁদা এবং অন্তর্বর্তিকালীন চাঁদাই হবে রিজার্ভ ফান্ডের আয়ের উৎস। রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো প্রতি মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে সঞ্চয়ী ফান্ডের অর্থ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে সদস্য প্রতি নির্ধারিত দশ টাকা উঠিয়ে তারিখসহ লিখে রাখা। উক্ত টাকা তার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে এবং তার হিসাব নিকাশ ও সমিতির ব্যয়ভার তাকে বহন করতে হবে। নিজ প্রয়োজনে বা অন্য কারো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তা ব্যয় করতে পারবেন না। শুধুমাত্র সমিতির অর্থনৈতিক প্রয়োজন যেমন নাস্তা, ব্যাংক একাউন্টিং বিল কম্পোজ, ফটোকপি, ভাড়া, মোবাইল বিল ইত্যাদি যে কোন প্রয়োজনে এই টাকা খরচ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি খরচের ভাউচার সংরক্ষণসহ তার বিস্তারিত বিবরণ তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন। প্রত্যেক মাসের আয় ব্যয় সুস্পষ্টভাবে খাতায় উল্লেখ করবেন। রিজার্ভ ফান্ডের আয়ের কোঠা শূন্য হলে রিজার্ভ ফান্ডের অর্থ সম্পাদক সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে অর্থের যোগান দিবেন। বছর দুয়েক পরে বিনিয়োগ খাতে কাজ শুরু হলে লাভ আসলে লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে লভ্যাংশের ১০% উঠিয়ে নিয়ে তারিখসহ লিখে রাখবেন।
রিজার্ভ ফান্ডের সকল আয় ব্যয়ের হিসাবের ক্ষেত্রে রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৭। রিজার্ভ ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক ঃ
রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদক ধারায় উল্লেখিত সকল ক্ষেত্রে রিজার্ভ ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক ফান্ড অর্থ সম্পাদকের সহকারী ও সহযোগী বিবেচিত হবেন। অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-অর্থ সম্পাদক উল্লেখিত সকল কার্যক্রম আঞ্জাম দিবেন।
রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর গ্রহণযোগ্য হবে।
৮। বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ঃ
সমিতির মূল উদ্দেশ্য যেহেতু পাঁচ বছর অর্থ সঞ্চয় করে সুদ মুক্ত নিঃস্বার্থ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্র সৃষ্টি করা তাই অল্প সময়ে যেন বৃহৎ পুঁজি নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়া যায়। তাই বছর দুয়েক পরে সমিতির সঞ্চয়ের টাকাকে কোন লাভজনক খাতে ইনভেস্ট করার কথা ভেবেছে মাইমূন সমিতি। অতএব, সমিতির বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা দায়িত্বে থাকবে একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও কুশলী সম্পাদক। তার প্রধান দায়িত্ব হল তিনি বৈধ লাভজনক বিনিয়োগ ক্ষেত্র খুঁজে বের করবেন এবং সমিতির পুঁজি অনুযায়ী সেই খাতে বিনিয়োগের সার্বিক ও ব্যবস্থাপনার কাজ আঞ্জাম দিবেন। বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তিনি বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছ থেকে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ উঠিয়ে বিনিয়োগ করবেন এবং অর্থ ফেরৎ আসলে তা লাভ-লোকসানসহ বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছে ফেরৎ দিবেন। সার্বিক সহযোগিতার জন্য তিনি সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করবেন।
বিনিয়োগের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৯। বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদক ঃ
বিনিয়োগ খাতে সমিতির কার্যক্রম শুরু হবে বছর দুয়েক পরে। তাই বিনিয়োগ ফান্ডের কার্যকরিতাও প্রয়োজন হবে বছর দুয়েক পরে। এই ফান্ডের অর্থ সম্পাদকের কাজ খুব সাধারণ তবে দক্ষতা ও বিশ্বস্ততা অপরিহার্য। বছর দুয়েক পরে কোন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে তখন বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয়ী ফান্ড থেকে উঠিয়ে তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন। বিনিয়োগ অন্তর্বর্তিকালীন সময়ে বিনিয়োগের টাকা তার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে। তিনি প্রয়োজন পরিমাণ টাকা বিনিয়োগে ইনভেস্ট করবেন। বিনিয়োগের পর ফেরৎ টাকা লাভসহ বিস্তারিত হিসাব নিকাশ খাতায় লিখে রাখবেন এবং লভ্যাংশের টাকা লভ্যাংশ ফান্ডে জমা দিয়ে লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের স্বাক্ষর তারিখসহ খাতায় উল্লেখ করবেন। (আল্লাহ না করুন) কোন লোকসান হলে তার পরিমাণ খাতায় লিখে রাখবেন। আর বিনিয়োগের অবশিষ্ট টাকা সঞ্চয়ী ফান্ডে জমা দিয়ে সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের স্বাক্ষর তারিখসহ খাতায় উল্লেখ করবেন।
বিনিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজে তার মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
১০। লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদক :
এই ফান্ডের কাজ শুরু হবে মূলত বছর দুয়েক পরে যখন বিনিয়োগ খাতে সমিতির কার্যক্রম শুরু হবে। লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো বিনিয়োগ খাত থেকে যে লাভ আসবে তার সংরক্ষণ ও হিসাব নিকাশ করা। বিনিয়োগ খাতে কোন লাভ হলে তিনি বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে লভ্যাংশের টাকা উঠিয়ে তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন। পরে লভ্যাংশের ১০% রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করে তার স্বাক্ষর তারিখসহ খাতায় উল্লেখ করবেন। আর অবশিষ্ট টাকা প্রত্যেক সদস্যের হারে কতো টাকা আসে তা হিসাব করে খাতায় লিখে রাখবেন এবং লভ্যাংশের টাকাগুলো নিজের কাছে রাখবেন। এই টাকা তার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে। সমিতির কোন প্রয়োজনে বা নিজের প্রয়োজনে এই টাকা ব্যয় করতে পারবেন না। যে কোন সময় সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদককে টাকা উপস্থিত করার জন্য বাধ্য করতে পারবেন। তখন টাকার সুস্পষ্ট হিসাব দেখাতে না পারলে বা টাকা উপস্থিত করতে গড়িমসি করলে কিংবা টাকা উপস্থিত করতে না পারলে খিয়ানতকারী হিসাবে বিবেচিত হবেন এবং সমিতির মূলনীতি অনুযায়ী তিনি বরখাস্তের যোগ্য হবেন। যে কোন সদস্য যে কোন সময় তার কাছে লভ্যাংশের হিসাব চাওয়ার অধিকার রাখবে।
লভ্যাংশ ফান্ড বিষয়ক সকল ক্ষেত্রে তার স্বাক্ষর আবশ্যক।
মায়ের উদর ছেড়ে কোন মানব সন্তান যখন নেমে আসে সবুজ পৃথিবীর বুকে তখন মানুষ সর্বপ্রথম ভাবে তার সুন্দর একটি নামের কথা; ঠিক তেমনই সুদমুক্ত ঋণদান প্রকল্পের সহায়ক মাধ্যম সঞ্চয়ী প্রকল্পের ধারণাটা যখন কিছু তরুণের মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরা বেয়ে নেমে এল বাস্তব জগতে তখনই ভাবনা এল এর সুন্দর একটি নাম প্রয়োজন। যে নামে থাকবে খাঁটি বাংলার ঘ্রাণ যা হবে ঘাত-প্রতিঘাতের বহু ঊর্ধ্বে। তাই ভেবে চিন্তে সঞ্চয়ী প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে মাইমূন সমিতি (ميمون- সৌভাগ্যবান)।”
সঞ্চয়ী প্রকল্পের স্বঘোষিত কার্যক্রম শুরু হবে ১লা জানুয়ারী ২০১২ ঝ. এবং দলবদ্ধ আবশ্যকীয় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৯ ঈ. পর্যন্ত। অনুর্ধ্ব ১০ জনের সদস্য বলয়ে মোট দশ বছর পর্যন্ত চলবে সঞ্চয়ী কার্যক্রম। মাসিক কিস্তি ৫০০ টাকা ও এককালীন ৬০০০ টাকাসহ বৎসরে সদস্যপ্রতি মোট ৬০০০ টাকা জমা হবে সমিতির “সঞ্চয়ী ফান্ডে”। দীর্ঘ দশ বছর মেয়াদ কালে সমিতির যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে সদস্যদের মাসিক চাঁদা এবং বৎসরের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে প্রয়োজনে সদস্যদের থেকে নেয়া চাঁদা ও লভ্যাংশের ১০% এর মাধ্যমে গঠিত হবে “রিজার্ভ ফান্ড”। বছর দুয়েক অতিক্রান্ত হলে সঞ্চয়ের কলেবর যখন কিছুটা বৃহৎ আকার লাভ করবে তখন পুঁজিগুলোকে নিস্ক্রিয় করে না রেখে লাভজনক কোন বিনিয়োগ খাতে ইনভেস্ট করা হবে। আর বিনিয়োগ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগ অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে বিনিয়োগের অর্থসংরক্ষণ ও হিসাব-নিকাশের জন্য গঠন করা হবে “বিনিয়োগ ফান্ড”। বিনিয়োগ থেকে আসা লাভের টাকা সংরক্ষণ ও হিসাব-নিকাশের জন্য গঠন করা হবে একটি “লভ্যাংশ ফান্ড”। দীর্ঘ দশ বছরে সঞ্চয়ী ফান্ড, রিজার্ভ ফান্ড, বিনিয়োগ ফান্ড ও লভ্যাংশ ফান্ড মোট চারটি ফান্ডের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সুন্দর পরিচালনার জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ সদস্যদেরকে নিয়ে গঠন করা হবে একটি “পরিচালনা কমিটি”। এই পাঁচটি ডিপার্টমেন্ট নিয়ে সঞ্চয়ী প্রকল্পটি যখন পঞ্চম বছরে পদার্পণ করবে তখন সমিতির সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে শুরু হবে মূল কার্যক্রম-“ঋণদান প্রকল্প”।
সুতরাং “সমবায় সমিতির” পাঁচটি ডিপার্টমেন্টের অবকাঠামো ও দায়-দায়িত্ব হবে নিম্নরূপ-
পরিচালনা কমিটি
১. সভাপতি
২. সহ-সভাপতি
৩. সাধারণ সম্পাদক
৪. সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদক
৫. সঞ্চয়ী ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক
৬. রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
৭. রিজাভ ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক
৮. বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
৯. বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
১০. লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
দায়-দায়িত্ব
১. সভাপতি
‘মাইমূন সমিতির’ সভাপতি মূলত সংগঠনের মহা-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে থাকবেন। সমিতির সার্বিক পরিচালনার দায়িত্ব তার উপর। সমিতির প্রতিটি বিষয়ে তিনি সার্বক্ষণিক নজরদারি করবেন এবং সকল সদস্য ও দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগসহ পরামর্শ, মতামত ও সিদ্ধান্ত আদান-প্রদান করবেন। প্রত্যেক বিভাগের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি কাজ সম্পর্কে সংবাদ তার জানা থাকবে। প্রয়োজনে নতুন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করার অধিকার থাকবে। তবে তা অবশ্যই সদস্যদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে। সমিতির সার্বিক ক্ষমতা তার হাতে থাকবে। সর্বক্ষেত্রে তার রায় চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। তবে সমিতির মূলনীতির পরিপন্থী না হতে হবে এবং একচেটিয়া মনোভাব না থাকতে হবে।
সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হবে সদস্যদের সর্ব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে। তার মেয়াদ সর্বোচ্চ দশ বছর। তিনি কোন পদে রদ-বদল করতে চাইলে তা সদস্যদের সর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করতে হবে। সভাপতির মাঝে সমিতির সংবিধানে প্রণীত মূলনীতি পরিপন্থী ও ক্ষতিকারক কোন কিছু পরিলক্ষিত হলে কিংবা দায়-দায়িত্বের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখা দিলে সকল সদস্যের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত মেয়াদের পূর্বেই তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হবে এবং নতুন সভাপতি নিয়োগ দেয়া হবে।
সমিতির কোন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সভাপতির মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর অপরিহার্য বলে গণ্য হবে।
২। সহ-সভাপতি
সমিতির সহ-সভাপতি মূলত সংগঠনের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে থাকবেন। সভাপতির ধারায় উল্লেখিত সকল দায়-দায়িত্বের ক্ষেত্রে তিনি সভাপতির সহকারী বিবেচিত হবেন। সভাপতির অনুপস্থিতিতে তার সকল কাজ সহ-সভাপতি আঞ্জাম দিবেন।
সভাপতির অনুপস্থিতিতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সহ-সভাপতির মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর গ্রহণযোগ্য হবে।
৩। সাধারণ সম্পাদক ঃ
সমিতির সাধারণ সম্পাদক মূলত সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করে থাকবেন। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো কোন মিটিংয়ের প্রয়োজন হলে সভাপতির সাথে আলোচনা করে মিটিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করে মিটিংয়ের আহ্বান করা এবং মিটিং পরিচালনা করা। বিভিন্ন প্রয়োজনে সদস্যদেরকে আহ্বান যোগাযোগ ইত্যাদি করবেন।
সকল মিটিং ও পদক্ষেপ গ্রহণের সময় তার মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৪। সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদক
সমিতির সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব খুব স্পর্শকাতর এবং কিছুটা জটিল। এর জন্য প্রয়োজন পরিপূর্ণ আমানতদার ও দক্ষ হিসাবি লোক। সমিতির সঞ্চয়ী টাকার দায়-দায়িত্ব ও সংরক্ষণের ভার অর্থ সম্পাদকের উপর ন্যাস্ত করা হবে না। বরং কোন ব্যাংকে “চলতি হিসাব” (ঈঁৎৎবহঃ অ/ঈ) একাউন্ট খুলে টাকা সংরক্ষিত রাখা হবে। এক্ষেত্রে তার দায়িত্ব হবে তিনি প্রতি মাসে ১-১০ তারিখের মধ্যে সকল সদস্যের মাসিক কিস্তি আদায় করে ব্যাংকে জমা রাখবেন। আর দূরের সদস্যদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট একাউন্টে টাকা জমা দেয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়ে নিবেন, এবং প্রতি মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে যে কোন দিন ব্যাংকে যোগাযোগ করে মোট টাকার হিসাব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আসবেন। প্রতি মাসে একাউন্টে মোট কত টাকা জমা হচ্ছে এবং কে কতো তারিখে টাকা জমা দিচ্ছে ও সদস্য প্রতি কতো টাকা জমা হয়েছে তার বিস্তারিত হিসাব খাতায় সুস্পষ্টভাবে লিখে রাখবেন। সমিতির বিনিয়োগ শুরু হলে সঞ্চয়ী ফান্ড থেকে কতো টাকা বিনিয়োগের জন্য নেয়া হচ্ছে, কতো টাকা বিনিয়োগ থেকে ফিরে আসছে তারিখসহ তার বিস্তারিত হিসাব খাতায় লিখে রাখবেন। সাথে সাথে অর্থ গ্রহণকারী ও ফেরৎ দানকারীর স্বাক্ষর নিবেন। বিনিয়োগে কোন লাভ আসলে লভ্যাংশের টাকা সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদক তা গ্রহণ করবেন না। বরং তা লভ্যাংশ ফান্ডে জমা হবে। সঞ্চয়ী ফান্ড শুধুমাত্র বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরৎ নিবে। (আল্লাহ না করুন) বিনিয়োগে কোন লোকসান হলে অবশিষ্ট টাকা জমা নিবেন ও লোকসানের পরিমাণ তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন।যে কোন সদস্য যে কোন সময় সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছে সঞ্চয়ী ফান্ডের হিসাব চাওয়ার অধিকার রাখেন এবং অর্থ সম্পাদক ফান্ডের হিসাব দেখাতে বাধ্য থাকবেন।
সঞ্চয়ী ফান্ড থেকে টাকা উত্তোলন ফেরৎসহ এই ফান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৫। সঞ্চয়ী ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক ঃ
সঞ্চয়ী ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক মূলত সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের ধারায় উল্লেখিত সকল বিষয়ে সহকারী ও সহযোগী হিসাবে বিবেচিত হবেন। সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তার সকল কাজ আঞ্জাম দিবেন।
অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর গ্রহণযোগ্য হবে।
৬। রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদক
রিজার্ভ ফান্ডের দায়-দায়িত্ব একটু বেশি, তবে, তেমন কঠিন নয়। রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের প্রধান কাজ হলো সমিতির আভ্যন্তরীণ সকল ব্যয়ভার বহন করা। রিজার্ভ ফান্ডের আয়ের উৎস হলো দুটি।
১। সদস্যদের থেকে নেয়া মাসিক দশ টাকা ও প্রয়োজনে অন্তর্বর্তিকালীন চাঁদা ।
২। লভ্যাংশের ১০%।
প্রাথমিক অবস্থায় সদস্যদের থেকে নেয়া মাসিক চাঁদা এবং অন্তর্বর্তিকালীন চাঁদাই হবে রিজার্ভ ফান্ডের আয়ের উৎস। রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো প্রতি মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে সঞ্চয়ী ফান্ডের অর্থ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে সদস্য প্রতি নির্ধারিত দশ টাকা উঠিয়ে তারিখসহ লিখে রাখা। উক্ত টাকা তার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে এবং তার হিসাব নিকাশ ও সমিতির ব্যয়ভার তাকে বহন করতে হবে। নিজ প্রয়োজনে বা অন্য কারো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তা ব্যয় করতে পারবেন না। শুধুমাত্র সমিতির অর্থনৈতিক প্রয়োজন যেমন নাস্তা, ব্যাংক একাউন্টিং বিল কম্পোজ, ফটোকপি, ভাড়া, মোবাইল বিল ইত্যাদি যে কোন প্রয়োজনে এই টাকা খরচ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি খরচের ভাউচার সংরক্ষণসহ তার বিস্তারিত বিবরণ তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন। প্রত্যেক মাসের আয় ব্যয় সুস্পষ্টভাবে খাতায় উল্লেখ করবেন। রিজার্ভ ফান্ডের আয়ের কোঠা শূন্য হলে রিজার্ভ ফান্ডের অর্থ সম্পাদক সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে অর্থের যোগান দিবেন। বছর দুয়েক পরে বিনিয়োগ খাতে কাজ শুরু হলে লাভ আসলে লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে লভ্যাংশের ১০% উঠিয়ে নিয়ে তারিখসহ লিখে রাখবেন।
রিজার্ভ ফান্ডের সকল আয় ব্যয়ের হিসাবের ক্ষেত্রে রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৭। রিজার্ভ ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক ঃ
রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদক ধারায় উল্লেখিত সকল ক্ষেত্রে রিজার্ভ ফান্ড সহ-অর্থ সম্পাদক ফান্ড অর্থ সম্পাদকের সহকারী ও সহযোগী বিবেচিত হবেন। অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-অর্থ সম্পাদক উল্লেখিত সকল কার্যক্রম আঞ্জাম দিবেন।
রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সহ-অর্থ সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর গ্রহণযোগ্য হবে।
৮। বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ঃ
সমিতির মূল উদ্দেশ্য যেহেতু পাঁচ বছর অর্থ সঞ্চয় করে সুদ মুক্ত নিঃস্বার্থ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্র সৃষ্টি করা তাই অল্প সময়ে যেন বৃহৎ পুঁজি নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়া যায়। তাই বছর দুয়েক পরে সমিতির সঞ্চয়ের টাকাকে কোন লাভজনক খাতে ইনভেস্ট করার কথা ভেবেছে মাইমূন সমিতি। অতএব, সমিতির বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা দায়িত্বে থাকবে একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও কুশলী সম্পাদক। তার প্রধান দায়িত্ব হল তিনি বৈধ লাভজনক বিনিয়োগ ক্ষেত্র খুঁজে বের করবেন এবং সমিতির পুঁজি অনুযায়ী সেই খাতে বিনিয়োগের সার্বিক ও ব্যবস্থাপনার কাজ আঞ্জাম দিবেন। বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তিনি বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছ থেকে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ উঠিয়ে বিনিয়োগ করবেন এবং অর্থ ফেরৎ আসলে তা লাভ-লোকসানসহ বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছে ফেরৎ দিবেন। সার্বিক সহযোগিতার জন্য তিনি সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করবেন।
বিনিয়োগের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
৯। বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদক ঃ
বিনিয়োগ খাতে সমিতির কার্যক্রম শুরু হবে বছর দুয়েক পরে। তাই বিনিয়োগ ফান্ডের কার্যকরিতাও প্রয়োজন হবে বছর দুয়েক পরে। এই ফান্ডের অর্থ সম্পাদকের কাজ খুব সাধারণ তবে দক্ষতা ও বিশ্বস্ততা অপরিহার্য। বছর দুয়েক পরে কোন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে তখন বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয়ী ফান্ড থেকে উঠিয়ে তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন। বিনিয়োগ অন্তর্বর্তিকালীন সময়ে বিনিয়োগের টাকা তার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে। তিনি প্রয়োজন পরিমাণ টাকা বিনিয়োগে ইনভেস্ট করবেন। বিনিয়োগের পর ফেরৎ টাকা লাভসহ বিস্তারিত হিসাব নিকাশ খাতায় লিখে রাখবেন এবং লভ্যাংশের টাকা লভ্যাংশ ফান্ডে জমা দিয়ে লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের স্বাক্ষর তারিখসহ খাতায় উল্লেখ করবেন। (আল্লাহ না করুন) কোন লোকসান হলে তার পরিমাণ খাতায় লিখে রাখবেন। আর বিনিয়োগের অবশিষ্ট টাকা সঞ্চয়ী ফান্ডে জমা দিয়ে সঞ্চয়ী ফান্ড অর্থ সম্পাদকের স্বাক্ষর তারিখসহ খাতায় উল্লেখ করবেন।
বিনিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজে তার মঞ্জুরি ও স্বাক্ষর আবশ্যক।
১০। লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদক :
এই ফান্ডের কাজ শুরু হবে মূলত বছর দুয়েক পরে যখন বিনিয়োগ খাতে সমিতির কার্যক্রম শুরু হবে। লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব হলো বিনিয়োগ খাত থেকে যে লাভ আসবে তার সংরক্ষণ ও হিসাব নিকাশ করা। বিনিয়োগ খাতে কোন লাভ হলে তিনি বিনিয়োগ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করে লভ্যাংশের টাকা উঠিয়ে তারিখসহ খাতায় লিখে রাখবেন। পরে লভ্যাংশের ১০% রিজার্ভ ফান্ড অর্থ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করে তার স্বাক্ষর তারিখসহ খাতায় উল্লেখ করবেন। আর অবশিষ্ট টাকা প্রত্যেক সদস্যের হারে কতো টাকা আসে তা হিসাব করে খাতায় লিখে রাখবেন এবং লভ্যাংশের টাকাগুলো নিজের কাছে রাখবেন। এই টাকা তার কাছে আমানত হিসাবে থাকবে। সমিতির কোন প্রয়োজনে বা নিজের প্রয়োজনে এই টাকা ব্যয় করতে পারবেন না। যে কোন সময় সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক লভ্যাংশ ফান্ড অর্থ সম্পাদককে টাকা উপস্থিত করার জন্য বাধ্য করতে পারবেন। তখন টাকার সুস্পষ্ট হিসাব দেখাতে না পারলে বা টাকা উপস্থিত করতে গড়িমসি করলে কিংবা টাকা উপস্থিত করতে না পারলে খিয়ানতকারী হিসাবে বিবেচিত হবেন এবং সমিতির মূলনীতি অনুযায়ী তিনি বরখাস্তের যোগ্য হবেন। যে কোন সদস্য যে কোন সময় তার কাছে লভ্যাংশের হিসাব চাওয়ার অধিকার রাখবে।
লভ্যাংশ ফান্ড বিষয়ক সকল ক্ষেত্রে তার স্বাক্ষর আবশ্যক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন